কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ইসলামে নারীর মর্যাদা কতটা সম্মানজনক ও মূল্যবান। কন্যা সন্তানকে যারা বোঝা মনে করে, তাদের জন্য কোরআনের এই উক্তিগুলো এক বিশাল জাগরণ। কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি এমন কিছু বার্তা দেয় যা সমাজের প্রচলিত ভুল ধারণাকে ভেঙে দিয়ে সত্যিকারের দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সাহায্য করে।
আমরা অনেকেই ভুলে যাই—ইসলাম কখনোই কন্যা সন্তানকে অবহেলার চোখে দেখেনি। বরং ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) নিজেই একাধিক কন্যা সন্তানের পিতা ছিলেন এবং তিনি তার মেয়েদের সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। তাই কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তিগুলো শুধু ধর্মীয় শিক্ষা নয়, এগুলো জীবনের দিকনির্দেশনাও বটে।
আজকের এই লেখায় আমরা দেখবো কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি কীভাবে আমাদের চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আনতে পারে এবং আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও মানবিক করতে পারে।
কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি
তাহলে দেখে নেয়া যাক বাছাইকৃত সেরা কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি, যা জীবন গঠনে এবং ফেসবুক ক্যাপশন হিসেবেও কাজে আসবে।
১. “আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখমণ্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে ক্রোধ সংবরণ করে না।” — [সূরা নাহল, আয়াত ৫৮]
২. “তারা বলে, ‘আল্লাহ সন্তানের জনক হয়েছে।’ পবিত্র তিনি। বরং তাঁরই যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে। সবই তাঁর অনুগত।” — [সূরা বাকারা, আয়াত ১১৬]
৩. “যে ব্যক্তি দুটি কন্যা সন্তানের প্রতিপালন করে তাদের বড় করে, সে কিয়ামতের দিন আমার সাথে এভাবে থাকবে।” — হাদীস, সহীহ মুসলিম
৪. “কন্যা সন্তান যদি কেউ লালন পালন করে এবং তার উপর দয়া করে, তবে সে জান্নাতে যাবে।” — হাদীস, মুসনাদে আহমদ
৫. “তুমি কন্যা সন্তানকে লালন করো, কারণ সে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যম।” — হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)
৬. “মেয়েরা রহমতের প্রতীক, তাদের জন্য ভালো ব্যবহার করো।” — হযরত আলী (রাঃ)
৭. “কন্যা সন্তান হল বরকতের চাবিকাঠি।” — ইমাম শাফেয়ী (রহ.)
৮. “মেয়ে সন্তানের জন্ম মানে হলো, আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ নিয়ামত।” — মুফতি তাকি উসমানী
৯. “যে ব্যক্তি তার কন্যা সন্তানকে সুন্দরভাবে বড় করে, আল্লাহ তার গুনাহগুলো মাফ করে দেন।” — হাদীস, তিরমিযী
১০. “কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি আমাদের শিক্ষা দেয়, কিভাবে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।” — ড. জাকির নায়েক
১১. “যে কন্যা সন্তানকে অবহেলা করে, সে নিজের ভাগ্যকে অভিশপ্ত করে।” — হযরত ওমর (রাঃ)
১২. “ইসলামে কন্যা সন্তান নিছক দায় নয়, বরং এক মহা দায়িত্ব ও সম্মানের প্রতীক।” — ইমাম গাজ্জালি
১৩. “মেয়ে সন্তানকে ভালোবাসা মানেই জান্নাতের পথে হাঁটা।” — হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)
১৪. “কন্যা সন্তান নিয়ে গর্ব করো, কারণ নবীজীর ঘরেও কেবল কন্যারাই ছিলো।” — শায়খ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
১৫. “যে ব্যক্তি তার কন্যা সন্তানদের হক আদায় করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” — সহীহ বুখারী
১৬. “মেয়েরা হচ্ছে পরিবারে রাহমাতের উৎস।” — হযরত হাসান (রাঃ)
১৭. “কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের বিখ্যাত উক্তিগুলো আমাদের সমাজ সংস্কারের পথ দেখায়।” — ড. ইউসুফ আল কারজাভী
১৮. “মেয়ে সন্তানকে যদি তুমি সম্মান করো, তাহলে আল্লাহ তোমাকে সম্মানিত করবেন।” — ইবনে তাইমিয়া
১৯. “মেয়ে সন্তান জান্নাতের দরজাগুলোর মধ্যে একটি।” — হাদীস, মিশকাত
২০. “তোমরা মেয়েদের প্রতি সদয় হও, কারণ তারা তোমাদের কাছে আমানত।” — হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)

২১. “মেয়ে সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষা—যারা ধৈর্য ধারণ করে, তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে।” — ইমাম আহমাদ
২২. “যে ব্যক্তি তার কন্যা সন্তানকে শিক্ষা দেয়, সে যেনো সদকা করে।” — হাদীস, আবু দাউদ
২৩. “মেয়েদের প্রতি কোমল হও, কারণ তারা সমাজের নরম শক্তি।” — ইমাম মালিক (রহ.)
২৪. “মেয়ে সন্তান আল্লাহর রহমতের একটি নিদর্শন।” — হযরত উসমান (রাঃ)
২৫. “কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের বাণীগুলো মনে করিয়ে দেয়, মেয়েরা বোঝা নয়, বরং আশীর্বাদ।” — শায়খ নুমান আলী খান
২৬. “যে ব্যক্তি তার মেয়েদের সম্মান দেয়, সে জান্নাতের অধিকারী।” — হাদীস, সহীহ নাসায়ী
২৭. “কন্যা সন্তানের সাথে সদ্ব্যবহার করো, আল্লাহ তোমার প্রতি সদয় হবেন।” — হযরত আবু বকর (রাঃ)
২৮. “মেয়ে সন্তানকে অবহেলা করো না, কারণ তার প্রতি সদয় হওয়া আল্লাহর নির্দেশ।” — হাদীস, তিরমিযী
২৯. “যে মেয়েকে বাঁচিয়ে রেখে লালন পালন করে, সে যেনো জিহাদের সওয়াব পায়।” — ইমাম হানবাল
৩০. “মেয়েরা মমতার ছায়া, তাদেরকে উপেক্ষা করো না।” — ইবনে আব্বাস (রাঃ)
৩১. “যে তার মেয়েকে খাদ্য দেয়, সে সদকা করলো।” — হাদীস, মিশকাত
৩২. “মেয়ে সন্তান মানেই আখিরাতের পাথেয়।” — হযরত আয়েশা (রাঃ)
৩৩. “নারী জাতিকে ভালোবাসা ঈমানের নিদর্শন।” — হযরত আলী (রাঃ)
৩৪. “কন্যা সন্তান হলো সমাজের বিবেক।” — ড. তাহা জাবির
৩৫. “মেয়ে সন্তান যত্ন চায়, অবহেলা নয়।” — ইমাম ইবনে কাসীর
৩৬. “মেয়েদেরকে যদি ইসলাম সম্মান দেয়, তবে আমরাও করব।” — শায়খ সৌদ আল শুরাইম
৩৭. “মেয়ে সন্তান নিয়ে গর্ব করো, কারণ তারা বেহেশতের চাবিকাঠি।” — হাদীস, সহীহ মুসলিম
৩৮. “কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের শিক্ষাগুলো আমাদের জন্য আলোর পথ।” — শায়খ উসামা আল কাওসী
৩৯. “মেয়ে সন্তান তোমার কাছে আমানত, এর জবাবদিহি হবে কিয়ামতের দিন।” — হাদীস, আবু দাউদ
৪০. “কন্যা সন্তান সৃষ্টির রহমত, অবজ্ঞা নয়।” — মুফতি মেনক
উপসংহার: কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি ও আমাদের দায়িত্ব
কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি আমাদের শিক্ষা দেয় কিভাবে একটি সমাজ নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি গঠন করবে। এই উক্তিগুলো কেবল ধর্মীয় বিধান নয়, বরং একটি মানবিক সমাজ গঠনের মৌলিক উপাদান। তাই এসব শিক্ষাকে আমাদের অন্তরে গ্রহণ করতে হবে।
কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তিগুলো শুধু ঐতিহাসিক দলিল নয়, এগুলো আমাদের চিন্তা-চেতনাকে আলোকিত করে। আমাদের পরিবারে, সমাজে এবং শিক্ষায় এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটানো এখন সময়ের দাবি।
সবশেষে বলবো, কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের এই উক্তিগুলো শুধু পাঠ করার জন্য নয়, এগুলো যেন আমাদের নীতিনির্ধারণ ও জীবনের চলার পথে প্রেরণার উৎস হয়। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে, ইসলাম কীভাবে নারীর মর্যাদা দিয়েছে—তা বোঝার জন্য এই উক্তিগুলো গভীরভাবে অনুধাবন করা জরুরি।