যৌবনের উক্তি আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে আশা, শক্তি, সম্ভাবনা এবং সিদ্ধান্তের ছাপ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। যৌবন কেবল শারীরিক সৌন্দর্যের সময় নয়, বরং এটা এমন এক সময় যখন মানুষ নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়, লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে। তাই যৌবনের উক্তি তরুণদের জীবনে আলোর দিশারী হিসেবে কাজ করে।
অনেক মহান মানুষ যৌবনের গুরুত্ব নিয়ে অসাধারণ উক্তি করে গেছেন। এই উক্তিগুলো শুধুই কাগজে লেখা কিছু বাক্য নয়, বরং তা একেকটি অনুপ্রেরণার উৎস। যৌবনের উক্তিগুলো শুধু ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য নয়, সামাজিক এবং ধর্মীয় দিক থেকেও দিকনির্দেশনা দেয়। ইসলাম ধর্মেও যৌবনের সময়কালকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং অনেক হাদীস ও কুরআনের আয়াতে এই পর্যায়ের গুরুত্ব স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
যৌবনের উক্তি
তাহলে দেখে নেয়া যাক বাছাইকৃত সেরা যৌবনের উক্তি, যা জীবন গঠনে এবং ফেসবুক ক্যাপশন হিসেবেও কাজে আসবে।
১. “যুবককে দেখলে আমি ভবিষ্যৎকে দেখি।” – শেখ মুজিবুর রহমান
২. “যৌবন এমন একটি আগুন, যা সঠিকভাবে না নিয়ন্ত্রণ করলে তা জীবনকে পুড়িয়ে দিতে পারে।” – হযরত আলী (রাঃ)
৩. “সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া দেবেন, তাঁদের একজন সেই যুবক যে আল্লাহর ইবাদতে যৌবন কাটায়।” – সহীহ বুখারী
৪. “তোমার পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি আসার আগেই গনিমত মনে করো—তার একটি হলো যৌবনকে বার্ধক্যের আগে।” – সহীহ হাদীস (হাকিম)
৫. “যৌবন যদি সঠিক পথে পরিচালিত হয়, তা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে।” – নেলসন ম্যান্ডেলা
৬. “যে যুবক নিজেকে চিনতে পেরেছে, সে বিশ্ব জয় করতে পারে।” – আল্লামা ইকবাল
৭. “যৌবনের সময়ই মানুষ সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেয়, তাই এ সময় সঠিক দিকনির্দেশনা জরুরি।” – ওমর ইবন খাত্তাব (রাঃ)
৮. “যৌবন হলো কর্মের সময়, আর বার্ধক্য হলো ফল ভোগের সময়।” – ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)
৯. “তরুণরাই জাতির ভবিষ্যৎ, তাই যৌবনের উক্তিগুলো তাঁদের গঠনে সাহায্য করে।” – কাজী নজরুল ইসলাম
১০. “যৌবনের শক্তি আল্লাহর পথে খরচ না করলে তা নিঃশেষ হয়ে যায়।” – হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)
১১. “তরুণদের মধ্যে যদি আল্লাহভীতি থাকে, তাহলে সে জাতির ভবিষ্যৎ নিরাপদ।” – হযরত ওমর (রাঃ)
১২. “যৌবনেই মানুষ গড়তে পারে নিজের ভাগ্য।” – শেখ হাসিনা
১৩. “যৌবনের সময় এক মুহূর্তও অলসতা করা মানে ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ফেলা।” – ইবনে তাইমিয়া (রহঃ)
১৪. “যে তার যৌবনের সময় নষ্ট করে, সে কখনো পূর্ণ মানুষ হতে পারে না।” – প্লেটো
১৫. “তরুণদের হৃদয় আগুনের মতো—তা যদি সৎ কাজে লাগে তবে আলো ছড়ায়, আর খারাপে লাগলে সবকিছু জ্বালিয়ে দেয়।” – ইবনে জওযী (রহঃ)
১৬. “যৌবনকে নিয়ন্ত্রণ না করলে তা নিয়তি নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে।” – অ্যারিস্টটল
১৭. “যুবকরা যদি সত্যের পথে থাকে, তবে সমাজে শান্তি আসে।” – হযরত আবু বকর (রাঃ)
১৮. “তরুণদের মাঝে আল্লাহর ভয় জাগিয়ে তুলতে হবে, যেন তারা পথভ্রষ্ট না হয়।” – ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)
১৯. “যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করা ঈমানের পরিচায়ক।” – হাদীস শরীফ
২০. “তরুণদের উক্তি না শুধু অনুপ্রেরণাদায়ক, বরং জীবনের গতি নির্ধারণ করে।” – ওয়াশিংটন

২১. “যৌবনের সঠিক ব্যবহার না করলে বার্ধক্যে শুধু আফসোসই থাকবে।” – সক্রেটিস
২২. “যুবকরা যদি সৎ হয়, তবে জাতি সৎ হয়।” – আলেকজান্ডার
২৩. “যৌবনের শক্তি দিয়ে পৃথিবী বদলানো সম্ভব।” – জন এফ কেনেডি
২৪. “তরুণরাই হচ্ছে আলোর বাহক, তাদের পথ দেখাতে যৌবনের উক্তিগুলো দারুণ সহায়ক।” – বারাক ওবামা
২৫. “যে ব্যক্তি যৌবনে নিজের নফসকে জয় করে, সে সফল।” – হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)
২৬. “তরুণরাই মূল শক্তি, যদি তারা সঠিক পথে চলে।” – মাহাথির মোহাম্মদ
২৭. “যৌবনের উদ্যম হারালে, জীবন থমকে যায়।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৮. “যৌবন কেবল আবেগের সময় নয়, বরং দায়িত্বেরও সময়।” – জওহরলাল নেহেরু
২৯. “যুবসমাজ যত সচেতন, জাতি তত উন্নত।” – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
৩০. “যৌবনের প্রতিটি দিন গণিমত মনে করে কাজে লাগাও।” – সহীহ হাদীস
৩১. “যৌবন একবার গেলে ফিরে আসে না, তাই এটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করো।” – ইমাম মালেক (রহঃ)
৩২. “তরুণদের চিন্তা-ভাবনাই একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।” – শেখ সাদী
৩৩. “যৌবনের উক্তি আমাদের সচেতন করে তোলে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে।” – ইবনে কাসির
৩৪. “যৌবনে যে অভ্যাস গড়ে, জীবনভর তা থাকে।” – হ্যারি এস. ট্রুম্যান
৩৫. “যৌবনই সবচেয়ে বড় পুঁজি।” – বিল গেটস
৩৬. “যৌবনের সময় নিজেকে যত গড়বে, তত সফল হবে।” – স্টিভ জবস
৩৭. “যৌবনের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই বড় হওয়া যায়।” – ইমাম আবু হানিফা (রহঃ)
৩৮. “যৌবনের শক্তিকে সদ্ব্যবহার করো, নয়তো তা বিপদে ফেলবে।” – হাসান আল বাসরি (রহঃ)
৩৯. “যে ব্যক্তি যৌবনে কুরআনের সাথে সম্পর্ক রাখে, তার জীবন সার্থক।” – ইমাম ইবনে কুদামা (রহঃ)
৪০. “যৌবনের ইবাদতই সবচেয়ে মজবুত ইবাদত।” – হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)
৪১. “যুবকরা যখন সচেতন হয়, তখন সমাজ বদলায়।” – আবু হুরাইরা (রাঃ)
৪২. “যৌবনের সাহসিকতাই তাকে সাহাবী বানায়।” – তাবেঈ
৪৩. “যে যুবক নিজের চরিত্র রক্ষা করতে পারে, সে সর্বশ্রেষ্ঠ।” – হাদীস
৪৪. “যৌবন হলো পরীক্ষার সময়, আর সফলতা হলো পুরস্কার।” – ইবনে রজব (রহঃ)
৪৫. “আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই যুবক যে গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করে।” – সহীহ হাদীস
৪৬. “যৌবনের ভুলগুলো বার্ধক্যে অনুশোচনার কারণ হয়।” – সক্রেটিস
৪৭. “তরুণদের চরিত্র যেমন, সমাজ তেমনই হবে।” – আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ)
৪৮. “যৌবন চলে যায়, কিন্তু তার প্রভাব সারাজীবন থেকে যায়।” – ওমর বিন আবদুল আজিজ
৪৯. “যৌবনে যত্ন নিলে ভবিষ্যৎ নিরাপদ হয়।” – আবু উবাইদা (রাঃ)
৫০. “যৌবনের সময় যদি আল্লাহর পথে চলে, বার্ধক্য আনন্দময় হয়।” – ইমাম নববী (রহঃ)
উপসংহার : যৌবনের উক্তি জীবনের দিকনির্দেশনায় অপরিহার্য
যৌবনের উক্তি শুধু অনুপ্রেরণার উৎস নয়, বরং জীবনের চলার পথে আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তে দিকনির্দেশনা দেয়। একজন মুসলমানের জন্য যৌবন হচ্ছে এমন একটি সুযোগকাল, যেখানে ইবাদত, চরিত্র গঠন এবং সমাজে অবদান রাখার সবচেয়ে বড় সুযোগ থাকে। যৌবনের উক্তিগুলোর মাধ্যমে আমরা শিখি কীভাবে সেই সময়কে গঠনমূলক কাজে লাগানো যায়।
বর্তমান সমাজে তরুণরা নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। এই সময় যৌবনের উক্তি তাদের শক্তি জোগায়, সত্য ও আল্লাহর পথে অটল থাকার সাহস দেয়। ইসলাম ধর্মেও যৌবনের গুরুত্ব অসীম। সঠিক দিকনির্দেশনা ছাড়া এই সময়কে কাজে লাগানো কঠিন, তাই এই উক্তিগুলো এক ধরনের নৈতিক কম্পাস হিসেবে কাজ করে।
শেষ কথা, যৌবনের উক্তিগুলো যদি তরুণ প্রজন্ম মনে রাখে, তবে তাদের জীবন যেমন সুন্দর হবে, তেমনি সমাজও আলোকিত হবে। এই মূল্যবান সময় যেনো অপচয় না হয়, তাই আমাদের উচিত এ ধরনের প্রজ্ঞাময় বাণী অনুসরণ করে যৌবনকে সার্থক করে তোলা।