রিজিক নিয়ে উক্তি সবসময় আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যে রিজিক মানুষের হাতের বিষয় নয়, বরং তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আমাদের জীবনে যতটুকু রিজিক লেখা আছে, তা কোনোভাবেই কমে যাবে না বা অন্য কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। এই রিজিক নিয়ে উক্তি গুলো তাই শুধু আশ্বস্ত করে না, বরং আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থা রাখতেও অনুপ্রাণিত করে।
অনেকেই রিজিক নিয়ে চিন্তায় ভোগেন। কারো চাকরি নেই, কেউ ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত, কেউ বা ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। অথচ কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী, রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন আল্লাহই। এই রিজিক নিয়ে উক্তি গুলো জীবনের কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য রাখার শিক্ষা দেয়। মনে রাখতে হবে, রিজিক আসে সময়মতো, হালাল পথে পরিশ্রম করলেই তাতে বরকত হয়।
রিজিক নিয়ে উক্তি
তাহলে দেখে নেয়া যাক বাছাইকৃত সেরা রিজিক নিয়ে উক্তি, যা ফেসবুক ক্যাপশন কিংবা নিজের জীবন গড়ায় বিশেষ সহযোগিতা করবে।
১. “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজ ঘরে বসে থাকে, তবে তার রিজিক এসে পৌঁছাবে না, যতক্ষণ না সে চেষ্টা করে।” – সহীহ মুসলিম
২. “নিশ্চয়ই তোমাদের রিজিক ও তোমাদের মৃত্যুর সময় নির্ধারিত।” – সুরা জারিয়াত, আয়াত ২২
৩. “আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অগণিত রিজিক দেন এবং যাকে ইচ্ছা সীমিত করে দেন।” – সুরা বাকারা, আয়াত ২১২
৪. “রিজিক হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। ধনী-গরিব উভয়ের জন্যই।” – ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)
৫. “আল্লাহর প্রতি যে ভরসা করে, তিনি তার জন্য রিজিকের পথ খুলে দেন।” – সুরা তালাক, আয়াত ৩
৬. “রিজিক হচ্ছে বিশ্বাসের ব্যাপার, দুশ্চিন্তা নয়।” – হাসান বসরী (রহ.)
৭. “আল্লাহর ভয়ে যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তাকে রিজিক দেন এমন পথ থেকে, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।” – সুরা তালাক, আয়াত ২
৮. “যে রিজিক হালাল নয়, তাতে কোনো বরকত নেই।” – হাদীস, তিরমিজি
৯. “কেউ কারো রিজিক কেড়ে নিতে পারে না, কারণ তা আল্লাহর লিখিত।” – ইমাম গাজ্জালি
১০. “হালাল উপার্জনই সবচেয়ে পবিত্র ইবাদত।” – রাসূলুল্লাহ (সা.)
১১. “তুমি পাখির মতো সকালে বের হও, সন্ধ্যায় ফিরে আসবে রিজিকে ভরপুর হয়ে।” – সহীহ তিরমিজি
১২. “আল্লাহ কাউকে তাঁর প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দেন, আবার কাউকে কম দিয়ে তাকে পরীক্ষা করেন।” – সুরা ফজর
১৩. “আল্লাহ যাকে চান সম্মান দেন, আর যাকে চান রিজিকের মাধ্যমে পরীক্ষা করেন।” – হাদীস
১৪. “সবর করো, কারণ রিজিক ধৈর্যবানদের জন্য।” – উম্মে সালমা (রা.)
১৫. “রিজিক আসে কাজের মাধ্যমে, কিন্তু বরকত আসে নিয়তের মাধ্যমে।” – ইবনে আব্বাস (রা.)
১৬. “তোমার পরিশ্রমের কারণে নয়, বরং আল্লাহর রহমতের কারণেই তুমি রিজিক পাও।” – সুরা শুরা
১৭. “আল্লাহর কাছে রিজিক চাও, যেন তা তোমাকে ধ্বংস না করে, বরং তোমাকে গড়তে সাহায্য করে।” – ইমাম আহমাদ
১৮. “একজন সৎ ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবীদের সঙ্গী হবে।” – সহীহ বুখারী
১৯. “আল্লাহ তাঁর বান্দাকে হালাল রিজিক দান করেন, যদি সে ন্যায় পথে চলে।” – হাদীস
২০. “রিজিক নিয়ে চিন্তা না করে, বরং নিজের আমল নিয়ে চিন্তা করো।” – হযরত আলী (রা.)

২১. “তুমি যখন রিজিক চাও, তখন আল্লাহর দয়া চাও, কারণ মূল উৎস তিনিই।” – হাফিজ ইবনে কাসির
২২. “রিজিকের সন্ধানে বের হও, আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন।” – হাদীস
২৩. “রিজিক নিয়ে হতাশ হইও না, রিজিক যে যেভাবে হোক ঠিকই আসবে।” – ইমাম শাফেয়ী
২৪. “যখন তুমি মনে করো রিজিক দেরিতে আসছে, তখনো ধৈর্য ধরো—আল্লাহ সব দেখছেন।” – ইবনে তাইমিয়া
২৫. “অল্প রিজিক নিয়ে শুকরিয়া করো, আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন।” – ইমাম মালিক
২৬. “বিপদে রিজিক কমে না, বরং ইমান পরীক্ষা হয়।” – আবু হুরায়রা (রা.)
২৭. “রিজিকের পিছনে ছুটো না, বরং ছুটো বরকতের পিছনে।” – জাফর সাদিক (রহ.)
২৮. “সৎ পথে চললে রিজিক আসবেই—সময়মতো, ঠিকমতো।” – ইমাম আবু হানিফা
২৯. “হালাল রিজিক পেতে হলে মন ও হাতকে পবিত্র রাখতে হয়।” – ইমাম নববী
৩০. “রিজিক না পাওয়ার দুঃখ নয়, বরং না চাওয়ার ব্যর্থতাই বড়।” – ইবনে রুশদ
৩১. “যে ব্যক্তি রিজিক নিয়ে তৃপ্ত, সে-ই প্রকৃত ধনী।” – রাসূলুল্লাহ (সা.)
৩২. “রিজিকের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় আল্লাহর উপর ভরসা।” – আবু বকর (রা.)
৩৩. “রিজিক হয়তো ধীরে আসে, কিন্তু আসে অবশ্যই।” – অজ্ঞাত
৩৪. “রিজিক যখন আসে, তখন কেউ থামাতে পারে না; আর যখন দেরি হয়, তখন কেউ তাড়াতেও পারে না।” – সুরা ইউনুস
৩৫. “পরিশ্রম করো, আল্লাহ তোমার রিজিক নিশ্চিত করবেন।” – উমর ইবন খাত্তাব (রা.)
৩৬. “রিজিক আসে ইবাদতের বরকতে।” – হাদীস
৩৭. “রিজিকের চেয়ে বরকত অনেক বড় সম্পদ।” – ইমাম তিরমিজি
৩৮. “দুনিয়া নিয়ে চিন্তা কম করো, আখিরাত নিয়ে বেশি।” – কারণ রিজিক লিখে রাখা হয়েছে।” – ইবনে জাওযি
৩৯. “রিজিক আল্লাহর গোপন কোষাগারে থাকে, যেটা সময়মতো খুলে যায়।” – হাদীস
৪০. “হালাল রিজিক আনে শান্তি, হারাম রিজিক আনে অশান্তি।” – ইমাম গাজ্জালি
৪১. “রিজিকের জন্য দৌড়াতে হবে ঠিক, তবে দুশ্চিন্তা করা যাবে না।” – ইমাম মুজাহিদ
৪২. “রিজিক কম পেলেও শুকরিয়া করা যেন বেশি পাওয়া।” – হাদীস
৪৩. “প্রত্যেক প্রাণীর রিজিক আল্লাহর দায়িত্বে।” – সুরা হুদ, আয়াত ৬
৪৪. “যে রিজিক তোমার নয়, তা কখনোই তোমার হবে না।” – ইবনে রজব
৪৫. “দ্বীনদার স্ত্রীই সবচেয়ে বড় রিজিক।” – সহীহ বুখারী
৪৬. “যার ভরসা আল্লাহর উপর, তার রিজিকের পথ বন্ধ হয় না।” – সুরা আনফাল
৪৭. “রিজিক নিয়ে মানুষের চিন্তা বেশি, কিন্তু ঈমান কম।” – হাসান বসরী
৪৮. “হালাল রিজিক খাওয়ার মাধ্যমেই দোয়া কবুল হয়।” – হাদীস
৪৯. “রিজিক ও মৃত্যু আল্লাহর হাতে—দুই-ই সময়মতো আসে।” – সুরা আ’রাফ
৫০. “আল্লাহর রহমত ছাড়া রিজিক পাওয়ার পথও বন্ধ।” – ইমাম ইবনে তাইমিয়া
উপসংহার: রিজিক নিয়ে উক্তি ও জীবনের বাস্তবতা
রিজিক নিয়ে উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবন মানেই এক ধরনের পরীক্ষা। আমরা কখন কিভাবে রিজিক পাব, তা আমাদের জানা নেই, কিন্তু চেষ্টা ও দোয়া চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা রিজিকের মালিক, তিনি যাকে ইচ্ছা দেন, যাকে ইচ্ছা সীমিত করেন।
রিজিক নিয়ে উক্তি গুলো আমাদের শিক্ষা দেয়, হালাল পথে অটল থাকা এবং ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি সৎ পথে চলে, তাহলে তার রিজিক কখনো বন্ধ হয় না। আর যদি রিজিক দেরি করেও আসে, তাতেও কোনো না কোনো কল্যাণ লুকানো থাকে।
সবশেষে বলতেই হয়, রিজিক নিয়ে উক্তি শুধু পড়ে গেলেই হবে না—তা বিশ্বাস করতে হবে। যখন আমরা বুঝি রিজিক আল্লাহর হাতে, তখন আমাদের চিন্তা কমে যায়, ভরসা বাড়ে। তাই হালাল পথে অটল থাকুন, ইবাদত বাড়ান, এবং আল্লাহর রহমতের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করুন।