সক্রেটিস এর উক্তি জ্ঞানের জগতে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তার চিন্তা, তার যুক্তি, তার জিজ্ঞাসা মানুষের মননশীলতাকে আজও গভীরভাবে নাড়া দেয়। সক্রেটিস এর উক্তি শুধু তত্ত্বচর্চার জন্য নয়, বরং বাস্তব জীবনের প্রতিটি পরতে প্রাসঙ্গিক এবং শিক্ষণীয়। এই গ্রিক দার্শনিকের বাণীগুলো এতটাই শক্তিশালী যে তা আমাদের জীবনবোধ ও আত্মউপলব্ধিকে আমূল বদলে দিতে পারে।
দর্শনের ইতিহাসে সক্রেটিস এর উক্তি সবসময় আলোচিত হয়েছে তার গভীরতা এবং প্রাসঙ্গিকতার জন্য। তিনি আমাদের শেখান কিভাবে প্রশ্ন করতে হয়, কিভাবে যুক্তির মাধ্যমে সত্যের কাছে পৌঁছাতে হয়। সক্রেটিস বলতেন, “অপরীক্ষিত জীবন বাঁচার যোগ্য নয়।” এই কথাটি শুধুই একটি বাক্য নয়, বরং একটা জীবনদর্শন। সক্রেটিস এর উক্তি তাই প্রতিটি চিন্তাশীল মানুষের কাছে এক অমূল্য সম্পদ।
সক্রেটিস ছিলেন এমন একজন, যিনি নিজে কিছু লিখে যাননি, অথচ তার শিক্ষাগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দার্শনিক মতবাদগুলোর ভিত্তি তৈরি করেছে। প্লেটোর মতো শিষ্যদের মাধ্যমেই আমরা সক্রেটিস এর উক্তি ও জীবনদর্শনের আস্বাদ পাই। সক্রেটিসের অনুপ্রেরণামূলক উক্তিগুলো আমাদের ভাবনার জগতে আলো ফেলতে বাধ্য করে।
সক্রেটিস এর উক্তি
তাহলে দেখে নেয়া যাক বাছাইকৃত সেরা সক্রেটিস এর উক্তি, যা আমাদের জীবন ও ভাবনায় প্রেরণা যোগাবে।
১। “আমি জানি আমি কিছুই জানি না।” — সক্রেটিস
২। “নিজেকে জানো।” — সক্রেটিস
৩। “একটি অনপরীক্ষিত জীবন বাঁচার যোগ্য নয়।” — সক্রেটিস
৪। “জ্ঞান হলো একটি গুণ, কিন্তু তা অর্জনের আগ্রহই মানুষকে আলাদা করে তোলে।” — সক্রেটিস
৫। “দুষ্ট লোকের চেয়ে অজ্ঞ লোক ভয়ানক।” — সক্রেটিস
৬। “শিক্ষাই আত্মার জন্য খাবার।” — সক্রেটিস
৭। “যারা অপ্রস্তুত, তাদের ক্ষমতায় আসা বিপজ্জনক।” — সক্রেটিস
৮। “আমরা যদি সত্য বলি, তবে আমাদের মনে ভয় থাকবে না।” — সক্রেটিস
৯। “অসৎ জীবন জীবনের অপচয়।” — সক্রেটিস
১০। “কোনো কিছু বিশ্বাস করার আগে প্রশ্ন করো, সন্দেহ করো, বুঝে নিও।” — সক্রেটিস
১১। “তর্ক করো, কারণ তর্কই হলো সত্যের প্রথম ধাপ।” — সক্রেটিস
১২। “সত্য উন্মোচনের জন্য সংশয়ের দরকার হয়।” — সক্রেটিস
১৩। “জ্ঞানীদের কাজ প্রশ্ন করা, বোকারা সব জানে ভাবতে ভালোবাসে।” — সক্রেটিস
১৪। “প্রকৃত জ্ঞান হলো নিজেকে জানা।” — সক্রেটিস
১৫। “সৎ মানুষ সবসময় সত্য বলে, কারণ সে ভয় পায় না।” — সক্রেটিস
১৬। “যারা ভুল স্বীকার করতে জানে না, তারা কখনও সত্যের পথে আসতে পারে না।” — সক্রেটিস
১৭। “ভুল থেকে শিখে নাও, তবে ভুলের দাস হয়ো না।” — সক্রেটিস
১৮। “বিবেকহীন জীবন এক প্রকার মৃত্যু।” — সক্রেটিস
১৯। “নির্বুদ্ধিতা সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।” — সক্রেটিস
২০। “যে নিজেকে সংশোধন করতে পারে, সে-ই প্রকৃত বুদ্ধিমান।” — সক্রেটিস

২১। “সততা সব সময় সহজ নয়, কিন্তু তা-ই শ্রেষ্ঠ।” — সক্রেটিস
২২। “জ্ঞান ছাড়া স্বাধীনতা অন্ধ।” — সক্রেটিস
২৩। “দয়া হলো জ্ঞানের পরিচয়।” — সক্রেটিস
২৪। “শাসন করা মানে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।” — সক্রেটিস
২৫। “অহংকারই মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু।” — সক্রেটিস
২৬। “ভালো মানুষ হতে গেলে ভালো কাজ করতে হয়।” — সক্রেটিস
২৭। “বুদ্ধি থাকা আর তা ব্যবহার করা—এই দুটো ভিন্ন জিনিস।” — সক্রেটিস
২৮। “শিক্ষা মানুষকে শক্তিশালী করে তোলে।” — সক্রেটিস
২৯। “সুখ মানেই ভালো চরিত্র।” — সক্রেটিস
৩০। “নিজের চিন্তাকে প্রশ্ন করো, তাহলেই তুমি উন্নত হবে।” — সক্রেটিস
৩১। “নেতৃত্বের মূল ভিত্তি হলো সততা ও নৈতিকতা।” — সক্রেটিস
৩২। “সত্যকে ভয় পেয়ো না, বরং তার মুখোমুখি হও।” — সক্রেটিস
৩৩। “মিথ্যা সবকিছুকে নষ্ট করে ফেলে, এমনকি ন্যায়ের ভিত্তিকেও।” — সক্রেটিস
৩৪। “স্মার্ট হওয়া নয়, ভালো হওয়াই বেশি প্রয়োজন।” — সক্রেটিস
৩৫। “অল্প কথায় গভীর অর্থ লুকায় থাকে।” — সক্রেটিস
৩৬। “পরিশ্রম ব্যতীত কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়।” — সক্রেটিস
৩৭। “সাহসই হলো আত্মার শ্রেষ্ঠ গুণ।” — সক্রেটিস
৩৮। “সত্যের খোঁজেই মানুষের জীবনের অর্থ।” — সক্রেটিস
৩৯। “প্রশ্ন ছাড়া উত্তর অর্থহীন।” — সক্রেটিস
৪০। “অবিচারকে সহ্য করাও একধরনের অন্যায়।” — সক্রেটিস
৪১। “ভালোবাসা ও জ্ঞান একসাথে থাকলে সমাজ বদলায়।” — সক্রেটিস
৪২। “অজ্ঞতা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়, জ্ঞান তাকে রক্ষা করে।” — সক্রেটিস
৪৩। “যেখানে ন্যায় নেই, সেখানে সমাজ নেই।” — সক্রেটিস
৪৪। “নিজের কাজ নিজেই করো, তবেই উন্নতি সম্ভব।” — সক্রেটিস
৪৫। “নেতৃত্বের যোগ্যতা চিন্তাশীলতার ভেতর লুকিয়ে থাকে।” — সক্রেটিস
৪৬। “ভবিষ্যৎ গঠনের চাবিকাঠি বর্তমানের হাতে।” — সক্রেটিস
৪৭। “বুদ্ধিমানের চিন্তা দৃঢ় ও বিনয়ী হয়।” — সক্রেটিস
৪৮। “সৎ জীবন মানেই শান্তির জীবন।” — সক্রেটিস
৪৯। “আত্মবিশ্বাস ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন।” — সক্রেটিস
৫০। “পরিবর্তনের জন্য চিন্তা করো, অভিযোগের জন্য নয়।” — সক্রেটিস
উপসংহার: সক্রেটিস এর উক্তি থেকে নেয়া জীবনের পাঠ
সক্রেটিস এর উক্তি শুধু তত্ত্বীয় চিন্তা নয়, বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করতেও সাহায্য করে। সত্য, ন্যায়, আত্মউন্নয়ন ও মানবিকতা—এসবের দিকনির্দেশনা মেলে তার বাণীতে। সক্রেটিস এর উক্তি নতুন প্রজন্মের চিন্তার জগতে আলো জ্বালাতে পারে, যদি আমরা তা মন থেকে গ্রহণ করি।
সক্রেটিস এর উক্তি জীবনের প্রতিটি স্তরে ব্যবহারযোগ্য। নিজের জীবন গঠনে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে, কিংবা আত্মউন্নয়নের যাত্রায়—তার ভাবনার গভীরতা আমাদের সঠিক দিশা দেখায়। সক্রেটিসের কথাগুলো পড়া মানে নিজের ভেতরে নিজেকে খোঁজা, নিজের প্রশ্নগুলোকে বোঝা এবং তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা।
অবশেষে বলা যায়, সক্রেটিস এর উক্তি শুধুই কিছু দার্শনিক বাক্য নয়, বরং এগুলো আমাদের অন্তরের আয়না। যারা সত্য খুঁজে বেড়ায়, যারা আত্মার মুক্তি চায়, তাদের জন্য সক্রেটিসের এই বাণীগুলো আজও অমূল্য রত্নের মতো। যত বেশি আমরা এই উক্তিগুলোকে পড়বো, তত বেশি জীবনের গভীরতা অনুভব করবো।